সংবিধান

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - পৌরনীতি ও নাগরিকতা - | NCTB BOOK

আমরা রাষ্ট্রে বাস করি। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে। এসব নিয়মাবলির সমষ্টিকে সংবিধান বলে । সংবিধানের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালিত হয় । সংবিধানকে বলা হয় রাষ্ট্রের দর্পণ বা আয়নাস্বরূপ । সংবিধানে নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য, শাসকের ক্ষমতা এবং নাগরিক ও শাসকের সম্পর্ক কিরূপ হবে তা সুস্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ থাকে । কাজেই রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের সংবিধান সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন । এ অধ্যায়ে আমরা সংবিধানের ধারণা, সংবিধানের গুরুত্ব, সংবিধান প্রণয়ন পদ্ধতি, বিভিন্ন প্রকার সংবিধানের বৈশিষ্ট্য, বাংলাদেশের সংবিধান তৈরির ইতিহাস, এর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য এবং বিভিন্ন সংশোধনী সম্বন্ধে জানব ।

এ অধ্যায় পড়া শেষে আমরা-

  •  সংবিধানের ধারণা ও গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে পারব ।
  • সংবিধান প্রণয়নের পদ্ধতি ব্যাখ্যা করতে পারব ।
  •  উত্তম সংবিধানের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে পারব।
  •  বাংলাদেশের সংবিধান রচনার ইতিহাস বর্ণনা করতে পারব।
  •  বাংলাদেশের সংবিধানের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করতে পারব।       
  •  বাংলাদেশের সংবিধানের বিভিন্ন সংশোধনী বর্ণনা করতে পারব ।
Content updated By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

জন লক
জ্যা জ্যাক রুশো
এ্যারিস্টটল
টি.এইচ. গ্রিন
রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারব্যবস্থার প্রবর্তন
রাষ্ট্রীয় মূলনীতির পরিবর্তন
সংসদীয় সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তকরণ
জন লক
জ্যা জ্যাক রুশো
এরিস্টটল
টি.এইচ.গ্রিন
রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারব্যবস্থার প্রবর্তন
রাষ্ট্রীয় মূলনীতির পরিবর্তন
সংসদীয় সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তকরণ
রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার
রাষ্ট্রপতি মেয়াদ সংক্রান্ত
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতিষ্ঠা
সুপরিবর্তনীয় সংবিধান
দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান
উত্তম সংবিধান
লিখিত সংবিধান
আইন বই
চুক্তিপত্র
অর্থবিল
অধিকার সনদ
আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে
অনুমোদনের মাধ্যমে
বিপ্লবের মাধ্যমে
ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে
অলিখিত ও সুপরিবর্তনীয়
অলিখিত ও দুষ্পরিবর্তনীয়
লিখিত ও দুষ্পরিবর্তনীয়
লিখিত ও সুপরিবর্তনীয়
ক্ষমতা বণ্টন করে দেওয়া হয়
প্রগতির সহায়ক
জরুরি প্রয়োজনে সহায়ক
সহজে পরিবর্তনীয়
১৭ এপ্রিল, ১৯৭২
১৯ অক্টোবর, ১৯৭২
৪ নভেম্বর, ১৯৭২
১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭২
শাসনকার্যের সুবিধার্থে
সংবিধানের ভুলত্রুটি দূর করার জন্য
রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে
মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের জন্য
এটি বিস্তৃত প্রকৃতির হয়
সহজেই সংবিধান পরিবর্তন করা যায়
রাষ্ট্র পরিচালনার নীতিসমূহ সন্নিবেশিত থাকে
বিপ্লবের মাধ্যমে সংবিধান তৈরি
বিপ্লবের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত
রীতিনীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত
সহজে পরিবর্তনযোগ্য
মৌলিক অধিকারের রক্ষক
আলাপ আলোচনার মাধ্যমে
বিপ্লবের দ্বারা
ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে
অনুমোদনের মাধ্যমে
১০ এপ্রিল, ১৯৭২
১৭ এপ্রিল, ১৯৭২
৪ নভেম্বর, ১৯৭২
১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭২
ড. কামাল হোসেন
ড. কামাল উদ্দিন
ড. কামাল সাহেব
ড. কামাল আহমেদ
প্রগতির সহায়ক
জরুরি প্রয়োজনে সহায়ক
সুস্পষ্টতা
যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় উপযোগী নয়
স্থায়ী সংবিধান
অস্থায়ী সংবিধান
এক বা একাধিক দলিলে লিপিবদ্ধ সংবিধান
আংশিক লিখিত ও আংশিক অলিখিত সংবিধান
আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে
বিপ্লবের দ্বারা
ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে
অনুমোদনের মাধ্যমে
লিখিত
অলিখিত
সুপরিবর্তনীয়
দুষ্পরিবর্তনীয়
সংসদীয় গণতন্ত্র
মানবাধিকার কমিশন
সংবিধান
নির্বাচন
অনুমোদনের মাধ্যমে
আলাপ আলোচনার মাধ্যমে
বিপ্লবের মাধ্যমে
ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে
মানবতাবিরোধী বিচার
জরুরি অবস্থা জারি
বাঙালি থেকে বাংলাদেশি
রাষ্ট্রপতি ক্ষমতা বৃদ্ধি
পুঁজিবাদী
একনায়তান্ত্রিক
রাজতান্ত্রিক
প্রজাতান্ত্রিক
সমাজতন্ত্র
একনায়কতন্ত্র
গণতন্ত্র
সংবিধান
আইন
রাষ্ট্রীয় বিধিবিধান
সংবিধান
প্রশাসনিক আইন
সরকারের দ্বারা
জনগণের মনোভাবের দ্বারা
সংবিধান দ্বারা
বিচারকার্য দ্বারা
রাষ্ট্রের লিখিত রূপ কী হবে তার নিয়ম
বিচার ও শাসন বিভাগের নিয়ম
রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলিক দলিল
জনগণের দ্বারা পরিচালিত শাসনব্যবস্থা
অধিকার রক্ষায়
সাংস্কৃতিক বিকাশে
সন্ত্রাস দমনে
দেশরক্ষায়
বিপ্লবের মাধ্যমে
আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে
অনুমোদনের মাধ্যমে
ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে
লিখিত সংবিধান
অলিখিত সংবিধান
সুপরিবর্তনীয় সংবিধান
দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান
গণতান্ত্রিক সরকার
একনায়কতান্ত্রিক সরকার
স্বৈরাচারী সরকার
যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার
আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে
বিপ্লবের দ্বারা
ক্রমবিকাশের মাধ্যমে
অনুমোদনের মাধ্যমে
অনুমোদনের দ্বারা
বিপ্লনের দ্বারা
পারস্পরিক বোঝাপড়ার দ্বারা
প্রথা রীতিনীতির দ্বারা
লিখিত সংবিধান
অলিখিত সংবিধান
দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান
লিখিত ও সুপরিবর্তনীয় সংবিধান
দুষ্পরিবর্তনীয়
সুপরিবর্তনীয়
বিপ্লবের সম্ভাবনা কম
জরুরি প্রয়োজনে সহায়ক
এক বা একাধিক দলিলে লিপিবন্ধ সংবিধান
আংশিক লিখিত ও আংশিক অলিখিত সংবিধান
অস্থিতিশীল সংবিধান
সহজে ভাষা বোঝা যায় না
নমনীয়তা
সম্পূর্ণ লিখিত
সুপরিবর্তনীয়
সুস্পষ্টতা
বিপ্লবের আশঙ্কা থেকে যায়
বিপ্লবের পথ প্রতিরোধ করে
অধিকার পরিপন্থি
জনগণের প্রতিফলন ঘটে
লিখিত
অলিখিত
সুপরিবর্তনীর
দুষ্পরিবর্তনীয়
লিখিত সংবিধান
অলিখিত সংবিধান
দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান
লিখিত ও অলিখিত সংবিধান
অলিখিত সংবিধান
লিখিত সংবিধান
দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান
সুপরিবর্তনীয় সংবিধান
লিখিত সংবিধান
অলিখিত সংবিধান
সুপরিবর্তনীয় সংবিধান
দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান
এককেন্দ্রিক সরকার
রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার
যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার
মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার
জাতীয় অগ্রগতির পথে বাধা সৃষ্টিকারী
ভাগে তবু ভাঁজে না
সুস্পষ্ট বাখ্যাদান
জনমতের প্রকৃত প্রতিফলন ঘটে না
সুষম প্রকৃতির
দুষ্পরিবর্তনীয়
অলিখিত
এককেন্দ্রিক
সুস্পষ্ট
মৌলিক অধিকার
সংশোধন পদ্ধতি
প্রজাতান্ত্রিক
লিখিত সংবিধান
অলিখিত সংবিধান
সুপরিবর্তনীয় সংবিধান
উত্তম সংবিধান
লিখিত ও নমনীয়
লিখিত ও সুস্পষ্ট
লিখিত ও অনমনীয়
লিখিত ও অস্পষ্ট
সুপরিবর্তনীয় সংবিধান
দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান
উত্তম সংবিধান
লিখিত সংবিধান
রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে
উত্তম সংবিধানে
সরকার গঠনের মাধ্যমে
নেতৃত্বের বিচারের মাধ্যমে
সংবিধানে
সংবিধানের প্রস্তাবনায়
রাষ্ট্রের আইনে
স্বাধীনতা সনদে
সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত
বি. চৌধুরী
ফজলে রাব্বী
ড. কামাল হোসেন
১৯৭২ সালের ১৭ এপ্রিল
১৯৭২ সালের ১৭ মে
১৯৭২ সালের ২৩ এপ্রিল
১৯৭২ সালের ২৩ মে
১৯ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর
১৯ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর
১৯ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর
১৯ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর
বাংলাদেশ সংবিধান
রাশিয়ার সংবিধান
চীনের সংবিধান
ব্রিটেনের সংবিধান
এটি সংশোধন করা যায় না
এর সংশোধন ব্যয়বহুল
দু-তৃতীয়াংশ সদস্যের সম্মতি দরকার
এর সংশোধন অন্যান্য আইনের ন্যায়
সকল ক্ষমতার মালিক রাষ্ট্রপতি
সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ
সকল ক্ষমতার মালিক প্রধানমন্ত্রী
সকল ক্ষমতার মালিক সেনাপতি
এক কক্ষবিশিষ্ট
দু কক্ষবিশিষ্ট
তিন কক্ষবিশিষ্ট
চার কক্ষবিশিষ্ট
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিধান করা
রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা
মূলনীতির পরিবর্তন করা
জনগণের সরাসরি ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিধান করা
মহিলাদের জন্য ৫০টি আসন সংরক্ষিত
উপরাষ্ট্রপতির পদ বিলুপ্ত
রাষ্ট্রীয় মূলনীতির পরিবর্তন
রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারব্যবস্থার প্রবর্তন
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে 1 ও 2 নং প্রশ্নের উত্তর দাও :


‘ক' ব্যক্তি প্রতিবেশী ‘খ’ ব্যক্তির একটি জমি দখল করে নিলে ‘খ’ ব্যক্তি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার শরণাপন্ন হয় । উক্ত সংস্থা প্রচলিত আইনের মাধ্যমে 'খ' ব্যক্তির জমি তাকে বুঝিয়ে দেয় ।
 

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নের উত্তর

'ক' ব্যক্তি প্রতিবেশী 'খ' ব্যক্তির একটি জমি দখল করে নিলে 'খ' ব্যক্তি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার শরণাপন্ন হয়। উক্ত সংস্থা প্রচলিত আইনের মাধ্যমে ‘খ’ ব্যক্তির জমি তাকে বুঝিয়ে দেয় ।

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নের উত্তর

জুনায়েদ তার জন্মদিনে নানার কাছ থেকে একটি বিশেষ গ্রন্থ উপহার পেল। সে নানার কাছে জানতে পারল এই গ্রন্থের আলোকেই বাংলাদেশ পরিচালিত হয়।

সংবিধান
পৌরনীতি ও নাগরিকতা
রাষ্ট্রবিজ্ঞান
স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নের উত্তর

'A' ও 'B' দুটি প্রতিবেশী রাষ্ট্র। সীমান্তের একটা জমি নিয়ে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। 'B' রাষ্ট্র দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে অভিযান চালিয়ে জমিটি দখল করে নেয় ।

সুস্পষ্টতা
জরুরি প্রয়োজনে সহায়ক
যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার ব্যবস্থার উপযোগী
স্থিতিশীলতা
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নের উত্তর

‘ক’ স্কুলটির পরিচালনার নিয়মনীতি নির্ধারণ করেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আজমল আলি । পাঠদান পদ্ধতি, পরীক্ষা গ্রহণ, নিয়োগসংক্রান্ত সকল বিষয়ে তার মতকে প্রাধান্য দিতে সকলে বাধ্য। প্রতিবাদের মাধ্যমে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়। তিনি সকলের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে নতুন নিয়মে স্কুল পরিচালনা করেন। এতে সকলেই খুশি । 

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নের উত্তর

জনাব ‘ক’ একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। জনাব ‘খ’ একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। এদের মধ্যে সমুদ্রের দ্বীপ দখল নিয়ে সংঘাত বেধে যায়। জনাব ‘খ' দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে অভিযান চালিয়ে দ্বীপটি দখল করে নেন। ততক্ষণে জনাব 'ক' সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।

সুষ্পষ্টতা
স্থিতিশীলতা
যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় উপযোগী
জরুরি প্রয়োজনে সহায়ক
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নের উত্তর

'ক' ব্যক্তি প্রতিবেশী 'খ' ব্যক্তির একটি জমি দখল করে নিলে ‘খ’ ব্যক্তি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার শরণাপন্ন হয়। উক্ত সংস্থা প্রচলিত আইনের মাধ্যমে 'খ' ব্যক্তির জমি তাকে বুঝিয়ে দেয়।

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নের উত্তর

সোমা বাংলাদেশে বসবাস করে। তার দেশটি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতা লাভের এক বছর পরে সংবিধান প্রণীত হয়। সংবিধান কয়েকটি ভাগ ও অনেকগুলো অনুচ্ছেদে বিভক্ত।

১৪৮টি অনুচ্ছেদ আছে
১৫১টি অনুচ্ছেদ আছে
১৫৩টি অনুচ্ছেদ আছে
১৫৭টি অনুচ্ছেদ আছে
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নের উত্তর
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নের উত্তর
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নের উত্তর
আইন
রাষ্ট্রীয় বিধিবিধান
সংবিধান
প্রশাসনিক আইন
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নের উত্তর
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নের উত্তর

বিধান একটি রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান। তার রাষ্ট্রের সংবিধান লিখিত । আব্বাসও একটি রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান কিন্তু তার রাষ্ট্রের সংবিধান অলিখিত। এদের মধ্যে সমুদ্রের দ্বীপ দখল নিয়ে সংঘাত বেধে যায় । 'আব্বাস দ্রুত দ্বীপ দখলের সিদ্ধান্ত নিয়ে অভিযান চালিয়ে দ্বীপটি দখল করে নেয়। ততক্ষণে বিধান সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।

জরুরি প্রয়োজনে সহায়ক
সুষ্পষ্টতা
যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার ব্যবস্থার উপযোগী
স্থিতিশীলতা
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নের উত্তর

নিহার ইংল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে তার বন্ধু লিমনের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। রাতে খাওয়ার পরে নিহার ও লিমন তাদের নিজ নি্জ দেশের সংবিধান নিয়ে আলোচনা করে। আলোচনার এক পর্যায়ে 'সংবিধান প্রণয়নের পদ্ধতি নিয়ে আলোচিত হয়।

বিপ্লবের দ্বারা
ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে
আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে
অনুমোদনের মাধ্যমে
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নের উত্তর

লিখনের দেশটি ১৯৭১ সালে স্বাধীন হয়। দেশটি স্বাধীন হওয়ার পরে সংবিধান তৈরির জন্য খসড়া কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি দেশটিকে একটি সংবিধান তৈরি করে দেয়। স্বাধীনতা অর্জনের প্রথম বার্ষিকীতে সংবিধান কার্যকরী হয়।

৪ মার্চ, ১৯৭২
৪ এপ্রিল, ১৯৭২
৪ নভেম্বর, ১৯৭২
ডিসেম্বর, ১৯৭২
১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭২
১৬ ডিসেম্বর ১৯৭৩
২৬ মার্চ, ১৯৭২
২৬ মার্চ, ১৯৭৩
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নের উত্তর

শিমুলদের দেশের সংবিধানে এ পর্যন্ত ১৬ বার সংশোধনী আনা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ বিভিন্ন ধরনের সংশোধনী আনা হয়। এখানে একটি বিষয়ে একাধিকবারও সংশোধনী আনা হয়েছে।

রাষ্ট্রের মূলনীতি পরিবর্তন করা হয়
জনগণের সরাসরি ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিধান করা হয়
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিধান করা হয়
বাংলাদেশের নাগরিক বাঙালি থেকে বাংলাদেশি করা হয়
রাষ্ট্রপতি পদে কোনো ব্যক্তি দুই মেয়াদের অধিক অধিষ্ঠিত না হতে পারায় নিয়ম
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা
জাতীয় সংসদে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত মহিলা আসন না থাকা
একনায়কতন্ত্র

সংবিধানের ধারণা ও গুরুত্ব

সংবিধান হলো রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলিক দলিল। যে সব নিয়মের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালিত হয় তাকে সংবিধান বলে । সরকার কীভাবে নির্বাচিত হবে, আইন, শাসন ও বিচার বিভাগ কীভাবে গঠিত হবে, এদের ক্ষমতা কী হবে, জনগণ ও সরকারের সম্পর্ক কেমন হবে-এসব বিষয় সংবিধানে উল্লেখ থাকে । এসব বিষয়ে সংবিধানের পরিপন্থী কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায় না। তাই সংবিধানকে রাষ্ট্রের চালিকা শক্তি বলা হয় । রাষ্ট্র বিজ্ঞানের জনক অ্যারিস্টটল বলেন, ‘সংবিধান হলো এমন এক জীবন পদ্ধতি যা রাষ্ট্র স্বয়ং বেছে নিয়েছে ।'

সংবিধান প্রণয়ন পদ্ধতি

সংবিধান প্রণয়নের বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে । তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদ্ধতিগুলো নিম্নে বর্ণনা করা হলো-
১. অনুমোদনের মাধ্যমে: জনগণকে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে অতীতে প্রায় সব রাষ্ট্রেই স্বেচ্ছাচারী শাসক নিজের ইচ্ছানুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করত। এতে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয় । জনগণকে শান্ত করার জন্য এবং তাদের অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য একপর্যায়ে শাসক সংবিধান প্রণয়ন করেন। যেমন- ১২১৫ সালে ইংল্যান্ডের রাজা জন ‘ম্যাগনাকার্টা' নামে অধিকার সনদ স্বাক্ষরে বাধ্য হন । এটি ব্রিটিশ সংবিধানের এক উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে আছে ।

২. আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে: সংবিধান প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত গণপরিষদের সদস্যদের আলাপ- আলোচনার মাধ্যমে সংবিধান রচিত হতে পারে। ভারত, পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান এভাবে প্রণয়ন করা হয়েছে । বাংলাদেশের সংবিধানও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে গণপরিষদ কর্তৃক ১৯৭২ সালে প্রণীত হয় ।

৩. বিপ্লবের দ্বারা: শাসক যখন জনগণের স্বার্থ ও কল্যাণ নিহিত নয় এমন কাজ করে অর্থাৎ শাসক স্বৈরাচারী শাসকে পরিণত হয়, তখন বিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শাসকের পরিবর্তন ঘটে। নতুন শাসকগোষ্ঠী শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করে নতুন সংবিধান তৈরি করে। রাশিয়া, কিউবা, চিনের সংবিধান এ পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছে ।

৪. ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে: বিবর্তনের মাধ্যমে সংবিধান গড়ে উঠতে পারে। যেমন- ব্রিটেনের সংবিধান ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে লোকাচার ও প্রথার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। এ ক্ষেত্রে সংবিধান কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রণয়ন করা হয় না, ধীরে ধীরে গড়ে উঠে। তাই বলা হয়, ব্রিটিশ সংবিধান তৈরি হয়নি, গড়ে উঠেছে।

সবিধানের শ্রেণিবিভাগ

সংবিধানের শ্রেণিবিভাগ নিচে দেখানো হলো-
১. লেখার ভিত্তিতে সংবিধানের শ্রেণিবিভাগ : লেখার ভিত্তিতে সংবিধান দুই ধরনের হতে পারে । যথা : ক. লিখিত সংবিধান ও খ. অলিখিত সংবিধান ।

ক. লিখিত সংবিধান : লিখিত সংবিধানের অধিকাংশ বিষয় দলিলে লিপিবদ্ধ থাকে । বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান লিখিত ।

খ. অলিখিত সংবিধান : অলিখিত সংবিধানের অধিকাংশ নিয়ম কোনো দলিলে লিপিবদ্ধ থাকে না। এ ধরনের সংবিধান প্রথা ও রীতিনীতিভিত্তিক । চিরাচরিত নিয়ম ও আচার অনুষ্ঠানের ভিত্তিতে এ ধরনের সংবিধান গড়ে উঠে । যেমন- ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত ।

তবে এ কথা সত্য যে, কোনো সংবিধানই পুরোপুরি লিখিত বা অলিখিত নয় । কোনোটি বেশি লিখিত আবার কোনোটি কম লিখিত ।

২. সংশোধনের ভিত্তিতে সংবিধানের শ্রেণিবিভাগ: সংশোধনের ভিত্তিতে সংবিধান দুই প্রকার । যথা ক. সুপরিবর্তনীয় সংবিধান ও খ. দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান ।

ক. সুপরিবর্তনীয় সংবিধান : সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের যে কোনো ধারা সহজে পরিবর্তন বা সংশোধন করা যায় । এ ক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধন বা পরিবর্তন করতে কোনো জটিলতার প্রয়োজন হয় না । সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় আইনসভা এর যেকোনো অংশ সংশোধন করতে পারে। ব্রিটিশ সংবিধান সুপরিবর্তনীয় সংবিধান ।

খ. দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান : দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের কোনো ধারা সহজে পরিবর্তন বা সংশোধন করা যায় না, এ ক্ষেত্রে সংবিধান পরিবর্তন বা সংশোধন করতে হলে জটিল পদ্ধতির আশ্রয় নিতে হয়। সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় এ ধরনের সংবিধান পরিবর্তন করা যায় না। প্রয়োজন হয় বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতা, সম্মেলন ও ভোটাভুটির । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয় ।

লিখিত সংবিধানের বৈশিষ্ট্য

লিখিত সংবিধানের যেসব উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে, সেগুলো নিম্নে বর্ণিত হলো-

১. সুস্পষ্টতা : লিখিত সংবিধানের অধিকাংশ ধারা লিখিত থাকে বলে এটি জনগণের নিকট সুস্পষ্ট ও বোধমগ্য হয় । লিখিত সংবিধানে সাধারণত সংশোধন পদ্ধতি উল্লেখ থাকে বিধায় খুব সহজে পরিবর্তন বা সংশোধন করা যায় না। কিন্তু সমাজ প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। লিখিত সংবিধান পরিবর্তিত সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না। এজন্য এটি কখনো কখনো প্রগতির অন্তরায় হিসেবে কাজ করে । তাছাড়া অনেক সময় সংবিধান সংশোধনের জন্য জনগণ বিপ্লব করতে বাধ্য হয়।

২. স্থিতিশীলতা : এ সংবিধানে সব কিছু লিখিত থাকে বিধায় শাসক তার ইচ্ছামতো এটি পরিবর্তন বা সংশোধন করতে পারে না । তাই লিখিত সংবিধান যেকোনো পরিস্থিতিতে স্থিতিশীল থাকতে পারে । লিখিত সংবিধানের সকল ধারা জনগণ ও শাসক মেনে চলতে বাধ্য হয় ।

৩. যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারব্যবস্থার উপযোগী : লিখিত সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারব্যবস্থার জন্য উপযোগী । এ সংবিধানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারব্যবস্থায় প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন করে দেওয়া হয়। সংবিধান লিখিত না হলে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারব্যবস্থায় এরূপ ক্ষমতা বণ্টন সম্ভব হতো না । যেমন- ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে লিখিত সংবিধানের মাধ্যমে ক্ষমতা বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে । উল্লেখ্য, লিখিত সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের সফলতার পূর্বশর্ত ।


8. শাসক ও জনগণের সম্পর্ক : লিখিত সংবিধানে শাসকের ক্ষমতা কী হবে, জনগণ কী কী অধিকার ভোগ করবে তার উল্লেখ থাকে । এর ফলে শাসক ও জনগণ নিজেদের ক্ষমতা ও অধিকার সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারে।

অলিখিত সংবিধানের বৈশিষ্ট্য

অলিখিত সংবিধানের বৈশিষ্ট্য নিম্নে বর্ণনা করা হলো- 

১. প্রগতির সহায়ক : সমাজ সর্বদা প্রগতির দিকে ধাবিত হয়। আর অলিখিত সংবিধান সমাজের প্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে সহজে পরিবর্তন করা যায়। অর্থাৎ এটি সমাজের পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে সহজেই খাপ খাওয়াতে পারে। সুতরাং অলিখিত সংবিধান প্রগতির সহায়ক। কিন্তু অধিক পরিবর্তনশীলতা আবার অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে ।

২. জরুরি প্রয়োজনে সহায়ক : অলিখিত সংবিধান যেহেতু সহজে পরিবর্তনীয়, তাই জরুরি প্রয়োজন মিটাতে অলিখিত সংবিধান অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে । তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে অলিখিত সংবিধান ঘন ঘন পরিবর্তনের ফলে কোনো স্থায়ী নীতি ও কার্যক্রম হাতে নেওয়া যায় না। এর ফলে সরকারব্যবস্থা অস্থিতিশীল হতে পারে ।

৩. বিপ্লবের সম্ভাবনা কম :  এ সংবিধান সহজে পরিবর্তন করা যায় । জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী অলিখিত সংবিধান পরিবর্তন হতে পারে বিধায় বিপ্লবের সম্ভাবনা কম থাকে ।

৪. বিবিধ : যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারব্যবস্থায় অলিখিত সংবিধান উপযোগী নয়। এ সংবিধানের অধিকাংশ বিষয় লিখিত না থাকায় রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয় সম্পর্কে অনেকেরই সুস্পষ্ট ধারণা থাকে না ।

উত্তম সংবিধানের বৈশিষ্ট্য

উত্তম সংবিধানের বৈশিষ্ট্য:

বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের কোনো না কোনো সংবিধান রয়েছে। যে রাষ্ট্রের সংবিধান যত উন্নত, সে রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা ততটা উত্তমভাবে পরিচালিত হয় । উত্তম সংবিধানের নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো রয়েছে ।

১ . সুস্পষ্ট : উত্তম সংবিধানে অধিকাংশ বিষয় লিখিত থাকে । এ সংবিধানের ভাষা সহজ, সরল ও প্রাঞ্জল হয়। এ কারণে উত্তম সংবিধান সকলের নিকট সুস্পষ্ট ও বোধগম্য হয় ।

২. সংক্ষিপ্ত : উত্তম সংবিধান সংক্ষিপ্ত প্রকৃতির । অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক বিষয় উত্তম সংবিধানে স্থান পায় না। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য উল্লেখযোগ্য বিধিবিধানগুলো এ সংবিধানে উল্লেখ থাকে ।

৩. মৌলিক অধিকার : নাগরিকের মৌলিক অধিকার উত্তম সংবিধানে উল্লেখ থাকে। এর ফলে জনগণ তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয় । তাছাড়া শাসক বা অন্য কেউ এ অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারে না ।

৪. জনমতের প্রতিফলন : উত্তম সংবিধান জনমতের ভিত্তিতে প্রণীত হয় । এ সংবিধানে জনগণের চাহিদা ও আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে । তাছাড়া সামাজিক রীতি-নীতি ও ঐতিহ্য এ সংবিধানে প্রতিফলিত হয় ।

৫. সুষম প্রকৃতির : উত্তম সংবিধান সুষম প্রকৃতির। এর অর্থ, উত্তম সংবিধান সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের মাঝামাঝি অবস্থান করে । অর্থাৎ এটি খুব সুপরিবর্তনীয় কিংবা খুব বেশি দুষ্পরিবর্তনীয় নয়। এর ফলে উত্তম সংবিধান সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে সক্ষম।

৬. সংশোধন পদ্ধতি : উত্তম সংবিধানের কোনো ধারার সংশোধন বা পরিবর্তন নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হয় । অর্থাৎ এ সংবিধানে সংশোধন পদ্ধতি উল্লেখ থাকে। সংবিধানের কোন অংশ কীভাবে সংশোধন করা হবে তা উত্তম সংবিধানে উল্লেখ থাকে ।

৭. রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি: রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি উত্তম সংবিধানে উল্লেখ থাকে । যেমন- বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে সন্নিবেশিত করা হয়েছে ।

৮. জনকল্যাণকামী : দার্শনিক রুশো বলেছেন, যে আইনে মানুষের কল্যাণ নাই তা উত্তম সংবিধান হতে পারে না ।

সুতরাং উত্তম সংবিধান হবে জনকল্যাণকামী । কোনো সংবিধানে উপরে উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো থাকলে তাকে উত্তম সংবিধান বলা যাবে ।

বাংলাদেশের সংবিধানের বৈশিষ্ট্য

বাংলাদেশের সংবিধান:  

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে সংবিধানের খসড়া প্রণয়নের জন্য ৩৪ সদস্যবিশিষ্ট সংবিধান প্রণয়ন কমিটি গঠিত হয়। উক্ত কমিটির সভাপতি ছিলেন ড. কামাল হোসেন। এ কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭২ সালের ১৭ই এপ্রিল। এ কমিটি অক্লান্ত পরিশ্রম করে বাংলাদেশের সংবিধানের খসড়া তৈরি করে এবং তা ১৯শে অক্টোবর ১৯৭২ গণপরিষদে উত্থাপিত হয়। এরপর সংবিধানের বিভিন্ন দিক নিয়ে গণপরিষদে আলোচনার পর ৪ঠা নভেম্বর ১৯৭২ সালে সংবিধান গৃহীত হয় এবং ১৯৭২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়।

বাংলাদেশের সংবিধানের বৈশিষ্ট্য: 

বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নে বর্ণনা করা হলো-

১. লিখিত দলিল : বাংলাদেশের সংবিধান একটি লিখিত দলিল। এর ১৫৩টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। এটি ১১টি ভাগে বিভক্ত । এর একটি প্রস্তাবনাসহ সাতটি তফসিল রয়েছে।

২. দুষ্পরিবর্তনীয় : বাংলাদেশের সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয়। কারণ, এর কোনো বিধান সংযোজন, পরিবর্তন বা সংশোধন করতে জাতীয় সংসদের মোট সংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সম্মতির প্রয়োজন হয় ।

৩. রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি : জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি নির্ধারণ করা হয়েছে । রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে এসব মূলনীতির দ্বারা অনুপ্রাণিত ও প্রভাবিত হয়ে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে ।

8. মৌলিক অধিকার : সংবিধান হলো রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমরা কী কী অধিকার ভোগ করতে পারব তা সংবিধানে উল্লেখ থাকায় এগুলোর গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে । যেমন- জীবনধারণের অধিকার, চলাফেরার অধিকার, বাকস্বাধীনতার অধিকার, চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা, ধর্মচর্চার অধিকার, সম্পত্তির অধিকার ইত্যাদি ।

৫. সর্বজনীন ভোটাধিকার: বাংলাদেশের সংবিধানে সর্বজনীন ভোটাধিকার প্রদান করা হয়েছে । অর্থাৎ জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, পেশা ইত্যাদি নির্বিশেষে ১৮ বা তদুর্ধ বছর বয়সের এ দেশের সকল নাগরিক ভোটাধিকার লাভ করেছে ।

৬. প্রজাতান্ত্রিক : সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র । এখানে সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ । জনগণের পক্ষে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন ।

৭. সংসদীয় সরকার : বাংলাদেশের সংবিধানে সংসদীয় বা মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয় । প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার হাতে শাসনকার্য পরিচালনার ভার অর্পণ করা হয়। এ সরকারব্যবস্থায় মন্ত্রিপরিষদ তার কাজের জন্য আইনসভার নিকট দায়ী থাকে ।

৮. এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র : বাংলাদেশ একটি এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র । এখানে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মতো কোনো অঙ্গরাজ্য বা প্রাদেশিক সরকার নেই । জাতীয় পর্যায়ে একটিমাত্র কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা সমগ্র দেশ পরিচালিত হয় ।

৯. আইনসভা : বাংলাদেশের আইনসভা এক কক্ষবিশিষ্ট। এর নাম 'জাতীয় সংসদ'। প্রজাতন্ত্রের আইন প্রণয়ন ক্ষমতা জাতীয় সংসদের উপর ন্যাস্ত। বর্তমানে জাতীয় সংসদ ৩৫০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত। সংসদের মেয়াদ ৫ বছর।

১০. সর্বোচ্চ আইন : বাংলাদেশের সংবিধান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। কারণ বাংলাদেশের সংবিধানের সাথে দেশের প্রচলিত কোনো আইনের সংঘাত সৃষ্টি হলে সে ক্ষেত্রে সংবিধান প্রাধান্য পাবে । অর্থাৎ যদি কোনো আইন সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্যহীন হয়, তাহলে ঐ আইনের যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ ততোখানি বাতিল হয়ে যাবে ।

১১. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা : বাংলাদেশের সংবিধানে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগের বিধান রয়েছে।

বাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনীসমূহ

বাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনীসমূহ ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের পর থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সংবিধান মোট ১৭ বার সংশোধন করা হয়েছে । বাংলাদেশ সংবিধানের ১৭টি সংশোধনীর প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য নিম্নে বর্ণিত হলো-  

 

 

সংশোধনী ও সাল

 

                                      বিষয়বস্তু
প্রথম সংশোধনী

জুলাই, ১৯৭৩

• সংসদীয় সরকারব্যবস্থার পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। চতুর্থ সংশোধনী

• ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিধান করা হয়।

দ্বিতীয় সংশোধনী
সেপ্টেম্বর,১৯৭৩

• দেশের ভেতরে গোলযোগ, যুদ্ধের আশঙ্কা কিংবা মানুষের জীবনযাত্রায় সংকট দেখা দিলে রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে ‘জরুরি অবস্থা' ঘোষণার ক্ষমতা দেওয়া হয়।

তৃতীয় সংশোধনী
নভেম্বর, ১৯৭৪
 

• বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে ভারত- বাংলাদেশের সীমান্ত সংক্রান্ত যে চুক্তি হয়, তৃতীয় সংশোধনীতে তা বৈধ ঘোষণা করা হয় ।

চতুর্থ সংশোধনী | জানুয়ারি, ১৯৭৫

• উপরাষ্ট্রপতির পদ সৃষ্টি এবং সকল রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করে একটিমাত্র জাতীয় দল সৃষ্টি করা হয়।

পঞ্চম সংশোধনী এপ্রিল, ১৯৭৯

• ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পরে সামরিক সরকার কর্তৃক যেসব বিধিবিধান প্রণয়ন ও সংবিধানের সংশোধনী আনা হয়েছে, সেগুলো পঞ্চম সংশোধনী আইনে বৈধ বলে ঘোষণা করা হয় ।

• রাষ্ট্রীয় মূলনীতি পরিবর্তন করা হয় ।

• বাংলাদেশের নাগরিকতা 'বাঙালি' থেকে 'বাংলাদেশি' করা হয়।

ষষ্ঠ সংশোধনী
জুলাই, ১৯৮১

• উপরাষ্ট্রপতির পদ লাভজনক নয় এই বিধান করে বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়।

সপ্তম সংশোধনী
নভেম্বর, ১৯৮৬

• ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ থেকে ১৯৮৬ সালের নভেম্বর পর্যন্ত জেনারেল এরশাদ যেসব বিধি-বিধান ও সামরিক আইন জারি এবং তার ভিত্তিতে যেসব কাজ সম্পাদন করেছিলেন, সেগুলোকে এ সংশোধনীতে বৈধতা দেওয়া হয় ।

অষ্টম সংশোধনী
জুন, ১৯৮৮

• বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম এবং ঢাকার বাইরে হাইকোর্টের ৬টি বেঞ্চ স্থাপন করা হয় ।

নবম সংশোধনী জুলাই, ১৯৮৯

• জনগণের সরাসরি ভোটে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিধান করা হয় ।

• রাষ্ট্রপতি পদে কোনো ব্যক্তি পর পর দুই মেয়াদের অধিক অধিষ্ঠিত না হতে পারার নিয়ম করা হয়।

দশম সংশোধনী

জুন, ১৯৯০

• জাতীয় সংসদে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ৩০টি আসনের সময় আরও ১০ বছর বৃদ্ধি করা হয় ।

একাদশ সংশোধনী
আগস্ট, ১৯৯১

• অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ কর্তৃক প্ৰয়োগকৃত সকল কার্যক্রম বৈধ করা হয় এবং পুনরায় তাঁর প্রধান বিচারপতি পদে ফিরে যাবার বিধান করা হয় ।

দ্বাদশ সংশোধনী
সেপ্টেম্বর, ১৯৯১

• রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারব্যবস্থার পরিবর্তে সংসদীয় সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন হয়।

• উপরাষ্ট্রপতির পদ বিলুপ্ত করা হয়।

ত্রয়োদশ সংশোধনী মার্চ, ১৯৯৬
 
• অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়।

চতুর্দশ সংশোধনী

মে, ২০০৪

• মহিলাদের জন্য জাতীয় সংসদে ৪৫টি আসন সংরক্ষণ করা হয়।

• রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতি সরকারি অফিসসহ নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের বিধান করা হয় ।

• সুপ্রীমকোর্টের বিচারক, পিএসসির চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হয়।

পঞ্চদশ সংশোধনী
জুলাই,২০১১

• তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়।

• ১৯৭২ মূল সংবিধানের রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি যথাঃ জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করা হয় ।

• রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখার পাশাপাশি সকল ধর্মচর্চার স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয় ।

• জাতীয় সংসদে মহিলাদের জন্য ৫০টি আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।

ষোড়শ সংশোধনী সেপ্টেম্বর,২০১৪

• সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনার বিধান পুনঃপ্রবর্তন করা হয়।

সপ্তদশ সংশোধনী জুলাই, ২০১৮ •জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত ৫০ টি নারী আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচনের ব্যবস্থা আরো ২৫ বছর রাখার বিধান করা হয়।
 
Promotion